Google search engine

বিসিবি সভাপতির পদ থেকে নাজমুল হাসান পাপনের পদত্যাগের আগেই নতুন সভাপতি নির্বাচন নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে জোর আলোচনা। জাতীয় দলের সাবেক কয়েকজন ক্রিকেটারের পাশাপাশি নাম আছে সংগঠকের। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া যাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাদের থেকে সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ।

সূত্র জানায়, শনিবার রাতে ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁর। সেখানেই নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বোর্ড সভাপতি হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন ফারুক। বিসিবির সাবেক এ প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) থেকে পরিচালক মনোনীত হবেন বিকেএসপির সাবেক পরামর্শক কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক বিদেশে পাড়ি জমান। পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদের মাধ্যমে পাপন জানান, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় চাইলে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে রাজি আছেন। বিদেশ থেকে আজ-কালের মধ্যে পদত্যাগপত্র পাঠাতে পারেন পাপন। সভাপতির পদ শূন্য হওয়ার পর জালাল ও ববির নাম প্রত্যাহার করে ফারুক ও ফাহিমকে পরিচালক মনোনীত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। বিসিবির গঠনতন্ত্রে এ ব্যাপারে পরিষ্কার ব্যাখ্যা না থাকলেও জাতীয় ক্রীড়া আইনে বাধা নেই।

এনএসসির আইন কর্মকর্তা এসএম কবিরুল হাসান বলেন, ‘এনএসসি যে কোনো সময় তার মনোনীত পরিচালককে প্রত্যাহার করতে পারে। তাদের জায়গায় অন্য কাউকে মনোনীত করতে পারবে। তবে এনএসসি কোটায় যে দু’জন পরিচালক আছেন, তারা পদত্যাগ করলে ভালো।’ ফারুক-ফাহিম পরিচালক মনোনীত হওয়ার পর পরিচালনা পর্ষদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত করা হবে।

বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতিকে পরিচালনা পর্ষদের সভা আহ্বান করতে হয়। পাপন পদত্যাগপত্র পাঠালেও সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরীর মাধ্যমে সভা আহ্বান করতে হবে বিদায় নেওয়ার আগে। সভায় দু’জন সহসভাপতি ও সভাপতি নির্বাচন করা হতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে, ক্রীড়া উপদেষ্টা কি দু’জন পরিচালক মনোনয়ন দিয়েই খুশি থাকবেন?

বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ওপর নজর রাখতে জরুরি ভিত্তিতে দু’জন পরিচালক মনোনয়ন দেবে। ফারুক আহমেদ সভাপতি নির্বাচিত হয়ে পর পর তিনটি জরুরি সভা আহ্বান করবেন। আত্মগোপনে থাকা পরিচালকরা পর পর তিন সভায় অনুপস্থিত দেখিয়ে পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে। ইসমাইল হায়দার মল্লিক, শফিউল আলম নাদেল, নাজমুল হাসান পাপন, নাঈমুর রহমান দুর্জয়, গাজী গোলাম মুর্তজা, সালাউদ্দিন চৌধুরী, কাজী ইনাম আহমেদকে বাদ দেওয়ার অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা হয়েছে। কাজী ইনাম, সালাউদ্দিনরা দেশে থাকায় সভায় অনুপস্থিত দেখিয়ে হয়তো বাদ দেওয়া সম্ভব হবে না। এ ক্ষেত্রে বিকল্প পথ বেছে নিতে হবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে। পরবর্তী সময়ে শূন্যপদে অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও সংগঠকদের পরিচালক করা হবে। এ তালিকায় জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল, খালেদ মাসুদ পাইলট, বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সাবেক সিইও সৈয়দ আশরাফুল হক, লুৎফর রহমান বাদল থাকতে পারেন।

বিসিবির একজন কাউন্সিলরের মতে, ‘কমিটি বিলুপ্ত করতে চাইলে অনেক পথ খোলা আছে। তবে এখন যেটা জরুরি হয়ে পড়েছে, নিয়মের ভেতরে থেকে বোর্ড কার্যকর রাখা। কারণ বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগ সরকারে গঠিত পরিচালকদের রাখতে চায় না।’

তবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ফারুক আহমেদ যেভাবে ভাবছেন, বিষয়টি অত সহজ নাও হতে পারে। এনএসসি কোটায় তারা পরিচালক মনোনীত হলেও সভাপতি নির্বাচিত হবেন সে নিশ্চয়তা নেই। কারণ বর্তমান কমিটির ১৪ জন পরিচালক– মাহাবুব উল আনাম, মঞ্জুর কাদের,আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ, নাঈমুর রহমান, কাজী ইনাম, সালাউদ্দিন চৌধুরী, সাইফুল আলম, ফাহিম সিনহা, ইফতেখার রহমান, মঞ্জুর আলম, নজিব আহমেদ, জালাল ইউনুস, সাজ্জাদুল আলম। রংপুর বিভাগ থেকে নির্বাচিত পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম দেশে থাকলেও পরিচালনা পর্ষদের সভায় যোগ দেবেন না।

বিদেশে আছেন– পাপন, মল্লিক, শেখ সোহেল, শফিউল আলম, তানভীর আহমেদ, ওবেদুর রহমান, গাজী গোলাম মর্তুজা, আ জ ম নাছির ও এনায়েত হোসেন। আলমগীর হোসেন আলো মারা যাওয়ায় বরিশাল বিভাগ থেকে কোনো পরিচালক নেই।

Google search engine