Google search engine

শামীম হোসেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার। এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের দুই ফরম্যাটে অভিষেক হয়েছে তার। তবে জাতীয় দলে নিয়মিত নন। রান খরায় দলে নিয়মিত আসা যাওয়াতেই সীমাবদ্ধ ছিল তার ক্যারিয়ার। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার ইনিংসগুলো তুলে এনেছে আবারও আলোচনায়।

রানের ধারাবাহিকতা, উইকেটের চারপাশে শর্ট খেলতে পারার সক্ষমতার জন্য তার নাম সবার মুখে মুখে। তবে পথচলাটা এত সহজ ছিল না শামীম হোসেনের জন্য। নিজের ব্যাটিং নিয়ে কাজ করেছেন। এক্ষেত্রে তার অনুপ্রেরণা সাউথ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার এবি ডি ভিলিয়ার্স। তার ব্যাটিং পর্যালোচনা করেই শামীম বের করেছেন মাঠে সফল হওয়ার সূত্র।

সম্প্রতি ক্রিকবাজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্যই জানান বাংলাদেশী এই বাঁহাতি ব্যাটার। শামীম হোসেন লেগসাইডে খেলা, স্কুপ ও সুইপ করার জন্য পরিচিত ছিলেন, কিন্তু উইকেটের সামনে খেলতে তাকে খুব একটা স্বচ্ছন্দ মনে হতো না। তবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যায়, কারণ তিনি একটি উঁচু ব্যাকলিফট গ্রহণ করেন, তার কৌশলে সামান্য পরিবর্তন আনেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘উঁচু ব্যাকলিফট আরামদায়ক মনে হয় এবং সেই কারণেই আমি এটি বেছে নিয়েছি কারণ এটি আমাকে আমার কনুই সোজা রাখতে সাহায্য করে এবং এটি এবি ডি ভিলিয়ার্স থেকে অনুপ্রাণিত।’

আমি তার (ডি ভিলিয়ার্স) মতো ব্যালেন্স রেখে শট খেলার চেষ্টা করি এবং অস্ট্রেলিয়ার শেষ এইচপি সফর থেকে আমি এই উঁচু কনুই উঁচু অবস্থান চেষ্টা করছি। আমি ইউটিউবে তার (ডি ভিলিয়ার্স) অনেক ব্যাটিং দেখেছি এবং অস্ট্রেলিয়ায় আমি বুঝতে পারি যে আমার কনুই যদি সোজা থাকে তবে আমি আরও ভাল হিট করতে পারি এবং তার জন্য আমার একটি ব্যাকলিফট দরকার।’

দীর্ঘদিন ধরে দলের বাইরে ছিলেন। কখনো সুযোগ পেলেও রান খরার কারণে দলের বাইরে থাকতে হতো শামীমকে। তবে দলের বাইরে থাকার সময়টা শুধু মন খারাপ করে কাটাননি শামীম। তিনি তার দুর্বলতাগুলো নিয়ে কাজ করেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ট্যুরের আগে এইচপি ট্যুর ও ‘এ’ দলের ট্যুরে ভালো রান করেছেন। তাতেই তার নিজের পরিশ্রমের উপর বেড়েছে আত্মবিশ্বাস। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘যে দলের বাইরে থাকে সে অবশ্যই খারাপ বোধ করে। আমি কখনই আমার আশা হারাইনি। আমি আমার সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি এইচপি ট্যুর এবং ‘এ’ দলের ট্যুর করেছি, যেখানে আমি ভালো করেছি এবং এটি (ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে) আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। আমি অপেক্ষা করছিলাম এবং আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে জাতীয় দলে সুযোগ পেলে আমি ভালো করব। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমি খুশি যে আমি আমার ভূমিকা পালন করতে পেরেছি।’

দলে শামীমের রোলটা অন্য সব ব্যাটসম্যান থেকে ভিন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণও। শেষের ওভারগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ রান দলকে দিতে পারে লড়াইয়ের ভালো পুঁজি। এর জন্য প্রথম বল থেকেই হিট করার মানসিকতা থাকতে হবে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান দলের বাইরে থাকার সময়টায় এই বিষয়গুলো নিয়েই কাজ করেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমি অন্যদের থেকে একটু আলাদা। আমার জন্য ভালো সময় হোক বা খারাপ সময় হোক আমি একই থাকার চেষ্টা করি এবং আমি নিজে অনেক প্রশিক্ষণ নিয়েছি এবং সম্ভবত সেই কারণেই আমি সফল হয়েছি। প্রশিক্ষণে আমার সবসময় একটি পরিকল্পনা থাকে। আমি মনে করি মাঠের চারপাশে শট খেলতে পারি। যখন আমি দলের বাইরে ছিলাম তখন আমি অফ সাইডে আরও বেশি প্রশিক্ষণ নিয়েছি। তাই আমি সেই শটগুলি আমার নিয়ন্ত্রণে পেয়েছি।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘সাধারণত যখন আমি ব্যাট করতে যাই, আমার বেশি কিছু ভাবার সময় থাকে না। আমার পরিকল্পনা হল গিয়ে হিট করা। এটি নির্দিষ্ট বোলার বাছাই করার মতো নয় কারণ আমি ১০-১৫ বল খেলতে পারি এবং আমাকে তাদের সবকটিতেই হিট করতে হবে। আমাকে প্রথম বল থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।’

দলের প্রয়োজনে যে কোন পজিশনে খেলতে প্রস্তুত শামীম। বাংলাদেশ ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চলছে বর্তমানে। সেখানে ভালো খেলেচ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে নিজের জায়গা নিশ্চিত করতে চান শামীম।

Google search engine