
বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনালে গুজরাট টাইটান্সকে হারালেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা। শেষ ২ বলে চেন্নাই সুপার কিংসের জয়ের জন্য দরকার ১০ রান। সোমবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনালের সাক্ষী হলো। শেষ দুই বলে ছক্কা আর চার হাঁকিয়ে বৃষ্টি আইনে চেন্নাইকে ৫ উইকেটের নাটকীয় জয় এনে দিলেন রবীন্দ্র জাদেজা।
হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটান্সের টানা দ্বিতীয় শিরোপার স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস। আইপিএলে এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো শিরোপা জিতল ধোনির দল। তাদের সমান ৫টি শিরোপা কেবল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের।এক ফাইনাল নিয়ে কত নাটক হলো! তার এমন সমাপ্তি, নাটকের চেয়েও যেন নাটকীয়।
রবিবার ছিল ফাইনালের নির্ধারিত দিন। কিন্তু বৃষ্টির কারণে টসই করা গেল না। ফলে ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ ডেতে। সেই রিজার্ভ ডেতেও এক ইনিংস যাওয়ার পর বৃষ্টির হানা।
ফলে সোমবারের ম্যাচ সময়ের হিসেবে মঙ্গলবার চলে গেল। আদতে একটা ফাইনাল শেষ করতে লাগল তিন দিন! তবে এতটা অপেক্ষার পর হতাশ হতে হয়নি সমর্থকদের। এমন ম্যাচ দেখার সৌভাগ্য যে মেলে কালেভদ্রে!
বৃষ্টি হতে পারতো চেন্নাইয়ে অভিশাপ, সেটি হয়েছে আশীর্বাদ। অভিশাপ কিভাবে? এই ম্যাচটি যদি পরিত্যক্ত হতো, তবে গ্রুপপর্বে পয়েন্ট বেশি থাকার সুবাদে চ্যাম্পিয়ন হতো গুজরাট টাইটান্স।কিন্তু বৃষ্টি এসে উল্টো আশীর্বাদ করে দিলো মহেন্দ্র সিং ধোনির দলকে।
গুজরাট তাদের সামনে ২০ ওভারে ছুড়ে দিয়েছিল ২১৫ রানের বিশাল লক্ষ্য। ম্যাচ পুরোটা হলে কাজটা কঠিনই হতো।
কিন্তু বৃষ্টির কারণে ওভার কমে যায়। ফলে ১৫ ওভারে চেন্নাইয়ের সামনে বেঁধে দেওয়া হয় ১৭১ রানের লক্ষ্য।
তাড়া করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে চেন্নাই। রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ডেভন কনওয়ের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৭৪ রান। সপ্তম ওভারে দুই ওপেনারকে শিকার করে গুজরাটকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন নুর আহমেদ। রুতুরাজ ১৬ বলে ২৬ ও কনওয়ে আউট হন ২৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ রানে। দুজনের বেঁধে দেওয়া সুরটা ধরে রাখেন বাকি ব্যাটাররাও। অজিঙ্কা রাহানে ১৩ বলে ২৭ রান করার পর আম্বাতি রায়ডু খেলেন ৮ বলে ১৯ রানের ক্যামিও ইনিংস। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন যিনি, সেই ধোনি অবশ্য উপহার দেন গোল্ডেন ডাক। অনেকেরই ধারণা আইপিএলে এটাই তার শেষ আসর। কিন্তু ব্যাট হাতে সেভাবে তা স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি চেন্নাই অধিনায়ক। প্রথম বলেই সোজা ক্যাচ তুলে দেন ডেভিড মিলারের হাতে।
ধোনিসহ রাহানে ও রায়ডুর উইকেট নিয়ে গুজরাটের জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে মোহিত শর্মা। গত দুই আসরে অবিক্রিত থাকলেও এবার ক্যারিয়ারে পুনর্জন্ম ঘটেছে এই বোলারের। ২৭ উইকেট নিয়ে এবারে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী তিনি। তাই শেষ ওভারে তার ওপর আস্থা রাখেন গুজরাট অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। প্রথম চার বল পর্যন্ত ঠিকঠাকই ছিলেন মোহিত। কিন্তু শেষ দুই বলে ১০ রান নিয়ে হয়তো তার পুরো আসরকেই মাটি করে দিলেন জাদেজা। একপ্রান্ত আগলে রেখে ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন শিভাম দুবে।
এদিকে আইপিএলের ফাইনালে তাড়া করতে নেমে শেষ বলে জেতার রেকর্ড ছিল কেবল রাজস্থান রয়্যালসের। প্রথম আসরে রুদ্ধ্বশ্বাস এক ফাইনালের জন্ম দেয় তারা। সেবার পরাজিত দলের নামটা ছিল চেন্নাই সুপার কিংস। এবার মুদ্রার উল্টোপিঠও দেখল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।
